গত তিন বছরে সিবিআই ব্যাঙ্ক জালিয়াতির মামলা নিয়েই বেশি ব্যস্ত


করোনা আবহে বিভিন্ন শিল্পে ব্যবসা - স্তিমিত হয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাঙ্কের বিবিধ কাজকর্মের হার কমলে এই সময়ে ব্যাঙ্কে জালিয়াতির ঘটনা কিন্তু আদৌ কমেনি৷ নীরব মোদী কাণ্ডে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের ক্ষতির কথা হয়ত অনেকেরই স্মরণে আছে৷ পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে ক্ষতির অঙ্কে যোগ হয়েছিল ১২০০০ কোটি টাকা৷ তার পরে ব্যাঙ্ক জালিয়াতি যেন অপ্রতিরোধ্য, চলছে চলবে৷ কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের প্রকাশিত এক তথ্যে জানা গেল গত এপ্রিল-জুন মাসে ১২টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ২৮৬৭টি জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে, যার মোট অঙ্ক ১৯,৯৬৪ কোটি টাকা৷

এপ্রিল-জুন মাসে সবচেয়ে বেশি জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে স্টেট ব্যাঙ্কে৷ ২০২৫টি৷ ২৩২৫.৮৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে৷ তবে এই সময়ে সবচেয়ে বেশি মার খেয়েছে ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া৷ টাকার অঙ্কে ৫১২৪.৮৭ কোটি টাকা৷ মোট ৪৭টি জালিয়াতির ঘটনায় এই ব্যাঙ্কটিতে এমন বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে৷

গত তিন বছরে সি বি আই যত মামলা রুজু করেছে তার বড অংশ ব্যাঙ্ক জালিয়াতির৷ ২০১৮ সালে সি বি আই যে মোট ১৬৮৫টি তদন্তের ভার হাতে নিয়েছিল তার ৫১২টি ব্যাঙ্ক জালিয়াত সম্পর্কিত৷ পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক সহ বিভিন্ন ব্যাঙ্কে জালিয়াতির ঘটনা নিয়ে যত তোলপাডই হোক না কেন, সমস্যার সমাধান এখন অধরা৷ প্রশাসনের সহযোগিতায় বেডে ঠা ধান্দাবাজ পুঁজিপতিদের দৌরাত্ম্যে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ঘটনা যেন অপ্রতিরোধ্য৷ লোক দেখানো কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে কলসির ফুটো যেমন ছিল তেমনই আছে৷ এই সুযোগে গলে যাচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির বিপুল পুঁজি৷ বলা বাঔল্য তার খেসারত দিতে হবে উপভোক্তাদের - যাদের সারা জীবনের কষ্টার্জিত সঞ্চিত অর্থ দিয়ে ব্যাঙ্ক তার ক্ষতিপূরণ করবে এমন আশঙ্কার বাস্তব ভিত্তি অনস্বীকার্য বাস্তব সত্য৷ নয়া জমানায় জনগণের একাংশের আর্থিক নিরাপত্তা বিপন্ন হতে চলেছে আগামি দিনে৷



আমেরিকার ইরানের পর ফের নিষেধাজ্ঞা জারি


শনিবার ১৯ সেপ্ঢেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব মাইক পম্পেয়ো ঘোষণা করলেন, ইরানকে অস্ত্র সরবরাহ কিংবা তৈরিতে সাহায্য করা থেকে শুরু করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিরীক্ষা, পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র সংক্রান্ত প্রযুক্তি সরবরাহের পরে এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হবে৷ ইতিমধ্যেই ইরানের পর নতুন এই নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তে নিরাপত্তা পরিষদের বঔ দেশ আপত্তি জানালে আমেরিকা তার সিদ্ধান্তে অটল থাকছে এবং ঔঁশিয়ারি দিয়েছে কোন দেশ এই নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে ইরানকে সাহায্য করলে, সেই ক্ষেত্রে আমেরিকা পাল্টা পদক্ষেপ নিতে পারে৷ তবে পাল্টা পদক্ষেপটা কি হতে পারে তার কোন ব্যাখ্যা এখন পায়া যায়নি৷

ইরানের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে এবং নিরাপত্তা পরিষদের মহাসচিবকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে নতুন করে আমেরিকার এই নিষেধাজ্ঞা যেন কার্যকর করা না হয়৷

ইরানের প্রতিনিধি রাষ্ট্রপুঞ্জে জানিয়ছেন আইনি জটিলতা এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের সদস্য দেশগুলির নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরোধ বানচাল করতে আমেরিকা বিশেষ তৎপর হয়ে উঠেছে৷ তেহরানের বিশ্বাস, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের গ্রহণযোগ্যতা বজায় রাখতে সদস্য দেশগুলি অবশ্যই উদ্যোগী হবে৷



ধর্ম নিয়ে দাপাদাপি


ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্রব্যবস্থায় ধর্ম নিয়ে দাপাদাপি এক বিপজ্জনক প্রবণতা, সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থে এই বিপজ্জনক প্রবণতা সংবিধান প্রণোদিত ধর্ম নিরপেক্ষতার মৌন নীতি আদর্শ বিরোধী৷ ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের বিপরীতে গিয়ে দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতাসীন ব্যক্তি হিন্দু মন্দিরে ভূমি পূজা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন, মন্দির আন্দোলনকে স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে তুলনা করে ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থে গরিষ্ঠাংশ জনগোষ্ঠীর মনোরঞ্জনের চেষ্টা করছেন৷ এ এক অপরিণামদর্শী চতুর রাজনৈতিক অপপ্রয়াস৷ সেই দলটির এক মুখ্যমন্ত্রী অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা না করেই নিতান্ত অর্বাচীনের মতো মন্তব্য করেছেন তিনি মসজিদ প্রতিষ্ঠার আমন্ত্রণে সাডা দিবেন না৷ এমন ভাবার কোন অবকাশ নেই - ঐ মুখ্যমন্ত্রীটির ধর্মনিরপেক্ষতার মহান আদর্শে উপ্বুদ্ধ হয়ে এমন মন্তব্য করেছেন৷ আসলে ধর্ম হতে প্রশাসনকে বিচ্ছিন্ন করার নীতিটি সারাদেশেই জীর্ণ বস্ত্রের ন্যায় পরিত্যক্ত৷

ভোটের চাপে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একই পথের পথিক৷ প্রসঙ্গত ২০১২ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইমাম মুয়াজ্জিনদের ভাতার কথা ঘোষণা করেছিলেন৷ তখনই সমালোচনা তুঙ্গে উঠেছিল - হিন্দু পুরোহিতরাই বা সরকারি দাক্ষিণ্য হতে বাদ পডবেন কেন? বিজেপি ইমামভাতার প্রসঙ্গ তুলে মমতার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ এনেছিল৷ যেন ঐ দলটি এ বিষয়ে ধোয়া তুলসীপাতা৷ একই দোষে দোষী ঐ দলটি, তবে সংখ্যালঘু নয়, সংখ্যাগুরু তোষণ৷ তফাৎ এই টুকুই৷ নির্বাচনের প্রাক্কালে পুরোহিত ভাতা চালু করার সিদ্ধান্তটি কেন তা অনুমান করা যেতে পারে৷ আসলে এই গোষ্ঠীর রাজনীতিকদের উপলব্ধির বাইরে যে ধর্মীয় পরিচিতির ভিত্তিতে বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষকে অতিরিক্ত সুবিধা দানের পর চাপের মুখে অন্য সম্প্রদায়ের মানুষকে আর্থিক সুবিধা দিয়ে তোষামোদ করে ভারসাম্য রক্ষার নীতিটি - ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শের পরিপন্থী৷ সত্য বটে পুরোহিত সম্প্রদায়ের আর্থিক দুর্দশার কথা মাথায় রেখেই রাজ্য প্রশাসন সাংবিধানিকবোধের পরিপন্থী এমন ঘোষণা করেছে৷ তাহলে রাজ্যের যে বঔকোটি মানুষ এই সাহায্যের দাবিদার, অতিমারির ধাক্কায় যে অসংগঠিত ক্ষেত্রের বিপুল সংখ্যক মানুষ জীবিকা হারিয়েছেন, দারিদ্রের অন্ধকারে নিমজ্জিত তাঁদের আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করা যায় কী? কেবলমাত্র ধর্মীয় সংযোগের জন্য প্রশাসনকে ধর্মের মধ্যে টেনে আনা এক ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় ঘোরতর অন্যায় বিপজ্জনক অপরাধ৷



দু’কান কাটা মোদী সরকার


কথায় বলে লজ্জা নারীর ভূষণ৷ সেই লজ্জা একবার ঝেডে ফেলতে পারলে দু’কান কাটা লজ্জাহীন মানুষের আর লজ্জিত হবার দায় থাকে না - দু’কান কাটাদের মতো রাস্তার মাঝখান দিয়ে চলতে এদের কোন অসুবিধে বা অস্বস্তি হয় না৷

সংসদে প্রশ্ন উঠেছিল লকডাউনের পর ঘরে ফেরার পথে কত পরিযায়ী শ্রমিকের প্রাণহানি হয়েছিল৷ কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী চোখের পলক না ফেলেই জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় সরকার তা জানেন না৷ স্বাধীন ভারতের সম্ভবত যে সর্ব বহৎ মানবিক সঙ্কটের সমাধান করার অক্ষমতার জন্য সরকারের লজ্জিত হয়ার কথা, সে সম্বন্ধে প্রাথমিক তথ্যটুকু মন্ত্রীমহাশয়ের কাছে নেই৷ কোন পূর্ব পরিকল্পনা ছাডাই প্রধানমন্ত্রীর হঠাৎ লকডাউনের আজগুবি ঘোষণায় যে অসংখ্য কয়েক কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে পডল, সন্তান পরিজন নিয়ে অন্নহীন কর্মহীন মানুষগুলি ঘরে ফিরতে গিয়ে অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে পডলেন, পথেই দুর্ঘটনায় মারা পডলেন বঔ পরিযায়ী শ্রমিক৷ তাদের সম্বন্ধে প্রাথমিক তথ্যটুকু সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর কাছে নেই কেন এই প্রশ্ন করা যেতেই পারে৷

অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্তের ফলে যে মানুষগুলি পথে ঘাটে মারা পডল তাদের খোঁজখবর নেয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা কেন্দ্রীয় প্রশাসনের মনে হল না কেন? আসলে কত মানুষ মারা পডল তার পরিসংখ্যান না থাকলে ক্ষতিপূরণের দায় ঝেডে ফেলা যায় বলেই এমন এক স্পর্শকাতর বিষয়ে দাসীন্যের পরিচয় দেয়া হয়েছে৷ প্রশ্নটা কেবল ক্ষতিপূরণেরই নয়, নৈতিকতার প্রশ্ন৷ মত পরিযায়ী শ্রমিকদের সংখ্যা জানা না থাকলে এই দুঃখজনক মত্যুকে স্বীকতি দেয়ার প্রশ্ন ঠে না৷ সরকারের আচমকা সিদ্ধান্তে, মাত্র কয়েক ঘণ্টার নোটিশে যাঁদের জীবনে নেমে এল মহাবিপর্যয়, সরকার মনে করে এই অভাবিত বিপর্যয়ের জন্য তাদের কোন দায় নেই৷ এই বিষয়ে পরিসংখ্যান রাখার দায় সরকারের নেই, সরকারের চোখে এই হতভাগ্য মানুষগুলির মত্যু অহেতুক৷ হঠাৎ লকডাউনের সিদ্ধান্ত যে প্রবল অন্যায় ছিল তা এখন তর্কাতীতভাবেই প্রমাণিত৷ কিন্তু এই ভুল সিদ্ধান্তের দায় ঝেড়ে ফেলাটা অবশ্যই বড় রকমের ঔদ্ধত্য৷



রাষ্ট্রপুঞ্জে সাধারণ পরিষদে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চিন বিরোধী আক্রমণাত্মক ভাষণ


রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদকে ব্যবহার করে ডোনাল্ড ট্রাম্প করোনা অতিমারির বিশ্বব্যাপী সংক্রমণের জন্য চিনকে দায়ী করে আক্রমণাত্মক ভাষণ দিলেন৷ করোনা সংক্রমণের এই অপকর্মের জবাব চিনকে দিতে হবে ইত্যাদি৷ অপর দিকে রেকর্ড করা ভাষণের মধ্য দিয়ে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং সাধারণ পরিষদে এই দুর্ভাগ্যজনক সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য বিশ্বের সব দেশের সহযোগিতা প্রার্থনা করেছেন৷ প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং বলেছেন কোন দেশের সঙ্গেই ঠাণ্ডা যুদ্ধ বা গরম যুদ্ধ শুরু করার বাসনা চিনের নেই৷

বিশ্বের বহত্তম অর্থনীতির এই দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক তিক্ত সম্পর্কের মধ্যে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের পরস্পর বিরোধী কণ্ঠস্বর শোনা গেল করোনা ভাইরাসের আক্রমণ দুই দেশের বাণিজ্যিক প্রযুক্তিগত সম্পর্কের পর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে৷

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অল্প কিছু দিনের মধ্যে আগামী নভেম্বর মাসে রাষ্ট্রপতি পদে পুনঃনির্বাচনের জন্য করোনা আবহেই লডতে হবে৷ করোনা ভাইরাস জনিত অতিমারিতে আমেরিকায় সর্বাধিক সংখ্যক মানুষের মত্যু এবং সর্বাধিক করোনা সংক্রমণের জন্য চিনকে আক্রমণের লক্ষ্য বস্তু করে নির্বাচনী লডাই ট্রাম্প উতরোতে চাইছেন৷ ট্রাম্পের অভিযোগ, চিন করোনা অতিমারির প্রাথমিক স্তরে দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়, কিন্তু আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল অক্ষুণ্ণ্ রাখার জন্য সারা বিশ্বে করোনা সংক্রমণ ছডিয়ে পডাটা সম্ভব হয়েছে৷ বিশ্বব্যাপী এই সংক্রমণের জন্য চিনকে অপরাধী ঘোষণা করতে হবে৷ প্রেসিডেন্ট শি’র ভাষণ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপুঞ্জে চিনের প্রতিনিধি ঝ্যাং জুন ট্রাম্পের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছেন৷ প্রেসিডেন্ট শি অতিমারির বিরুদ্ধে ঔ’র নেতত্ব এই যুদ্ধে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন৷ করোনার বিরুদ্ধে এই লডাই সব দেশের মধ্যে লডাইয়ের পরিবর্তে সহযোগিতা এবং সংহতিরই বিশেষ প্রয়োজন বলেছেন চিনের সর্বশক্তিমান নেতা শি জিন পিং৷



ব্যাপক সংখ্যায় তিব্বতের কৃষি শ্রমিকদের বাধ্যতামূলক শ্রমশিবিরে পাঠানো হচ্ছে


চিন সম্প্রতি আর বেশি সংখ্যায় তিবব্েতর কষি শ্রমিকদের বলপূর্বক উৎখাত করে চিনের অন্য অঞ্চলে শিল্প শ্রমিকে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে সামরিক কায়দায় প্রশিক্ষণের জন্য বঔ শিক্ষাশিবিরের আয়োজন করেছে৷ ইতোপূর্বে পশ্চিম জিন জিয়াং অঞ্চলে এমন প্রশিক্ষণ শিবিরের ব্যবস্থা হয়েছিল৷ মানবাধিকার কর্মীরা চিন সরকারের এই কর্মসূচিকে নিপীডনমূলক শ্রমশিবির বলেই আখ্যায়িত করেছিল৷

সরকারি সংবাদ মাধ্যমগুলির প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী ব্যাপক সংখ্যক কষি শ্রমিকদের চিনে নানা অঞ্চলে শিল্প শ্রমিকের কাজে নিযুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে বেশ কয়েক বছর ধরেই৷

তিবব্েতর আঞ্চলিক সরকারি প্রশাসনের য়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যে জানান যায়, অতি দ্রুত ব্যাপক সংখ্যক কষি শ্রমিকদের শ্রম শিবিরে পাঠানোর জন্য বেজিং থেকে কোটা দেয়া হয়েছে৷ ২০২০ সালের প্রথম ৭ মাসে প্রায় ৫ লক্ষ মানুষকে এই কর্মসূচিতে শিক্ষণের জন্য স্থানান্তরিত করা হয়েছে৷ তাছাডা প্রায় ৫০,০০০ তিবব্তবাসী গ্রামের মানুষদের তিবব্েতরই অন্যত্র শিল্পশ্রমিক হিসাবে কাজ করার জন্য পাঠানো হয়েছে৷

প্রসঙ্গত ১৯৬৬-১৯৭৬ সালের মধ্যে চিনের সাংস্্কতিক বিপ্ল্বের সময় তিবব্েতর মানুষের ঐতিহ্যময় জীবনশৈলীর পর এমন আক্রমণ সংগঠিত হয়েছিল৷ বর্তমান চিনের সর্বশক্তিমান নেতা শি জমানায় সেই ইতিহাসেরই পুনরাবত্তি ঘটছে৷



কেন্দ্রীয় সরকারকে শ্রমিক জীবনের মৌলিক চাহিদাগুলি উপেক্ষা করা চলতে পারে না


গত মঙ্গলবার (২২-৯-২০২০) লোকসভায় Industrial Relations Code Bill 2020, Code on Security Bill 2020 এবংOccupational Safety, Health and Working Conditions Code Bill 2020 গহীত হল৷

শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী শ্রম আইনের সংশোধনের দাবি নতুন নয়৷ এতদ্‌সত্ত্বে এমন এক স্পর্শকাতর বিষয়ে শ্রমিক স্বার্থের দিকে নজর দিয়ে এখনো তেমন কোন বিতর্ক বা আলোচনাই হয়নি, এতদিনের শ্রম আইন সংস্্কারের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল যেভাবেই হোক, পুঁজি মালিকের ইচ্ছা অনুযায়ী শ্রমিকদের কাজে নিয়োগ করা এবং কাজ থেকে বরখাস্ত করার নীতি অবাধে চালিয়ে যায়ার ক্ষমতা দেয়া এর জন্য কোন সরকারি অনুমোদনের প্রয়োজন নেই৷

এই মুহূর্তের করোনা অতিমারির আবহে যখন প্রয়োজন ছিল আর নমনীয় শ্রম আইনের, যখন প্রয়োজন ছিল শ্রমিক নিরাপত্তার ব্যবস্থাটা আর প্রসারিত মজবুত করা, যখন পরিযায়ী শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তার ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নির্মাণ করা, বর্তমানে শাসকদল এই কাজে নিদারুণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে বস্তুত সংসদকে পাশ কাটিয়ে বিনা বিতর্কে সংসদে শ্রম আইনের তথাকথিত সংস্্কার বিল অনুমোদনের ব্যবস্থা করল৷ উৎপাদন বদ্ধির স্বার্থে, ব্যবসায়িক স্বার্থে বা সংস্থার মালিকদের স্বার্র্থে নমনীয় শ্রম আইনের প্রয়োজন৷ কিন্তু কোন সংস্থায় ৩০০ শ্রমিকের কম সংখ্যক শ্রমিক কাজ করলে, সেই সংস্থায় ছাঁটাইয়ের জন্য কোন সরকারী অনুমোদনের প্রয়োজন পর্যন্ত বাতিল হলে, বেশির ভাগ সংস্থায় কর্মরত শ্রমিকদের চাকরির নিরাপত্তা বলতে কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না, শ্রম আইন সংস্্কার বিলগুলি আইনে পরিণত হয়ার আগে এই প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলির পূর্ণ বিবেচনা প্রয়োজন৷ শ্রম আইন সংস্্কারের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য হলে বর্তমান চূডান্ত আর্থিক দুর্যোগের সময় শ্রমিক স্বার্থকে কোনভাবেই অস্বীকার করা চলে না৷